১৭ বছরের ফাইয়াজের হাতে দড়ি বাঁধায় আইনের ব্যত্যয় হয়েছে

বাংলাদেশ

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় ১৭ বছরের কিশোর হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজের হাতে দড়ি বেঁধে আদালতে হাজির করায় শিশু আইনের ব্যত্যয় হয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষ ভুল স্বীকার করে নেওয়ায় এ সংক্রান্ত আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আজ সোমবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, শেখ মো. মোরসেদ।

এর আগে গতকাল রোববার ফাইয়াজকে রিমান্ডে নেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের শুনানি হয়। এ সময় তাকে রিমান্ডে নেওয়া হবে না বলে হাইকোর্টকে জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। পরে আদালত ফাইয়াজকে শিশু আইন অনুযায়ী সুরক্ষা দেওয়ার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে শিশুটিকে বাবা-মায়ের হেফাজতে দিতে বলেন আদালত। পরে নিম্ন আদালত কিশোর ফাইয়াজের রিমান্ড বাতিল করেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে চলাকালে মাতুয়াইল হাসপাতালের বিপরীত পাশে এক পুলিশ সদস্যকে মেরে ঝুলিয়ে রাখার মামলায় ১৭ জন আসামির মধ্যে ১৬ নম্বর আসামি হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজ। এজাহারে তার বয়স দেখানো হয়েছে ১৯ বছর। তবে জন্ম নিবন্ধন অনুসারে, তার জন্ম ২০০৭ সালের ১৯ এপ্রিল। ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ঢাকার শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এ-প্লাস পেয়েছে সে।

ফাইয়াজের আইনজীবী ইশতিয়াক হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, জন্ম নিবন্ধন ও এসএসসির সার্টিফিকেট অনুসারে, ফাইয়াজের বয়স ১৭ বছর ৩ মাস ৮ দিন। যাত্রাবাড়ী থানার এ মামলায় আদালতে ফাইয়াজের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আমরা বয়সের কারণে রিমান্ড বাতিলের আবেদন করি এবং এ মামলাটি শিশু আদালতে পাঠানোর অনুরোধ করি। তবে আদালত অপারগতা প্রকাশ করেন।

তিনি আরও বলেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে আপাতত রিমান্ড না দিয়ে মামলাটি নথিভুক্ত রেখে বয়স প্রমাণের অন্যান্য পদ্ধতি অনুসরণ করে তাকে শিশু কারাগারে প্রেরণের অনুরোধ করি। আদালত এ বিষয়েও অপারগতা প্রকাশ করে ৭ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন। আমি মনে করি, ফাইয়াজের ৭ দিনের রিমান্ড একটি বিতর্কিত আদেশ।

২৪ জুলাই রাতে ফাইয়াজকে মাতুয়াইলের বাসা থেকে সাদাপোশাকে লোকজন ডিবি পরিচয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে ধরে নিয়ে যায় বলে জানায় তার পরিবার। পরে ২৭ জুলাই তাকে ঢাকার নিম্ন আদালতে হাজির করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *