গোলান মালভূমিতে হামলার জবাব হিসেবে লেবাননে হিজবুল্লাহর একাধিক টার্গেটে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। শনিবার গোলান মালভূমিতে হামলা চালানো হয়। ওই হামলার জন্য হিজবুল্লাহকে দায়ী করছে ইসরায়েল। গোলান মালভূমির একটি ফুটবল মাঠে রকেট হামলায় শিশুসহ ১২ জন নিহত হয়।
ওই হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৯ জন। শনিবার (২৭ জুলাই) মাজদাল শামস নামের একটি গ্রামে এই হামলা চালানো হয়। লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর চার সদস্য নিহত হওয়ার পর এই হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সময় রোববার সকালে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা লেবানন ভূখণ্ডের গভীরে হিজবুল্লাহর সাতটি টার্গেটে হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় কী পরিমাণ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে তা এখনও পরিষ্কার নয়।
এর আগে গোলান মালভূমিতে হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, নিহতদের মধ্যে একাধিক শিশু রয়েছে। আর এই হামলা হিজবুল্লাহই চালিয়েছে। আমাদের কাছে থাকা তথ্যে কোনো ভুল নেই। আমরা কোনোভাবেই চুপ থাকবো না ও হিজবুল্লাহকে এর কঠোর জবাব দেবো।
তবে ইসরায়েল এই দায় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা অস্বীকার করেছে হিজবুল্লাহ। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, মাজদাল শামসে করা হামলায় শত্রুপক্ষের কিছু সংবাদমাধ্যম আমাদেরকে অভিযুক্ত করছে। আমরা পরিষ্কারভাবে এই অভিযোগ প্রত্যাখান করছি। এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের সশস্ত্র শাখা ইসলামিক রেজিস্ট্যান্সের কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। তবে হিজবুল্লাহর বিভিন্ন টার্গেটে ইসরায়েলের পাল্টা হামলার ঘটনায় উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গোলান মালভূমির চারটি গ্রামের মধ্যে মাজদাল শামস একটি, যেখানে প্রায় ২৫ হাজার ড্রুজ জনগণ বসবাস করেন। ১৯৮১ সালে সিরিয়ার গোলান মালভূমি অধিভুক্ত করার সময় তাদের ইসরায়েলি নাগরিকত্বের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তখন তারা তা ফিরিয়ে দেয়, ফলে তারা ইসরায়েলে পড়াশোনা ও কাজ করতে পারলেও ভোট দিতে পারেন না।
এর আগে ইসরায়েল-অধিকৃত গোলান মালভূমিতে হামলার ঘটনায় হিজবুল্লাহকে চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তার কার্যালয় থেকে জারি করা এক বিবৃতি বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু স্থানীয় সম্প্রদায়ের নেতাকে বলেছেন ইসরায়েল এই হত্যাকাণ্ডের জবাব না দিয়ে যাবে না এবং হিজবুল্লাহকে এজন্য কঠিন মূল্য দিতে হবে এবং এটা হবে নজিরবিহীন।
তার এমন হুঁশিয়ারির কয়েক ঘণ্টা পরেই হিজবুল্লাহর বিভিন্ন টার্গেটে হামলার ঘটনা ঘটলো। ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, তারা সন্ত্রাসী টার্গেটগুলোতে হামলা চালিয়েছে।