৩০০ কিলোমিটার সীমান্ত উন্মুক্ত কুষ্টিয়ায়, বেপরোয়া চোরাকারবারিরা

বাংলাদেশ

কুষ্টিয়ায় জেলার ৩০০ কিলোমিটার সীমান্ত পথ একেবারে উন্মুক্ত। সীমান্তের ঐ এলাকা জুড়ে গড়ে ওঠেনি নিরাপত্তা কিংবা সুরক্ষা বেষ্টনী। ফলে উন্মুক্ত সীমান্তের দুর্গম এলাকা দীর্ঘকাল রুট হিসেবে ব্যবহার করছে চোরাকারবারিরা। চোরাপথে মরণ নেশা এলএসডি, হোরোইন, আফিমসহ বিভিন্ন মাদক, অস্ত্র-গোলাবারুদ, সাপের বিষ, কসমেটিকস ও শাড়ি, কম্বলসহ নানা পণ্য ঢুকছে বাংলাদেশে। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার হচ্ছে স্বর্ণ ও রৌপ্যসহ অন্যান্য মালামাল।

বিজিবির তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত গত ১০ মাসে ২৭৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪ হাজার ২৯৫ টাকার চোরাচালানের মালামাল আটক করেছে বিজিবি। কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) সেক্টরের উপ-মহাপরিচালক কর্নেল মো. মারুফুল আবেদীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিজিবির তথ্যমতে জানা যায়, কুষ্টিয়া সদর দপ্তর (৪৭ বিজিবি) ও অধীনস্থ মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি) ও চুয়াডাংগা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) আভিযানিক টিম গত ১০ মাসে পৃথক অভিযানে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা মূল্যমানের চোরাচালানি পণ্যের চালান আটক করেছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়া সদর সেক্টরের টিম ৮০ বোতল এলএসডি, ক্রিস্টাল মেথ আইস, কোকেন, আফিম, হেরোইন, ইয়াবা, মদ, ট্যাপেনটাডল ট্যাবলেট, ভায়াগ্রা, ফেনসিডিল, সিলডিনাফিল ট্যাবলেট, বিয়ার ও গাঁজাসহ ১৬০ কোটি ১ লাখ ২১ হাজার ৩৫৮ হাজার টাকার মাদক উদ্ধার করেছে।

চোরাকারবারিদের দমন ও সীমান্তের নিরাপত্তায় দুই-তিন কিলোমিটার পরপর স্থাপিত বিওপিতে বিজিবি নিযুক্ত থাকলেও আইনের চোখ এড়িয়ে দুর্গম চোরাপথে আসছে মাদকের বড় বড় চালান, আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ অন্যান্য পণ্য সামগ্রী। অবৈধ এসব চালানের একাংশ ধরা পড়লেও থামছে না চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্য। মূলত দেশের অভ্যন্তরে মাদকের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ফলে মাদকের ছোবলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যুবসমাজ ও শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া সীমান্তের একাংশের মানুষ চোরা কারবারকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। ফলে ঝুঁকি সত্ত্বেও বেশি আয়ের উত্স হিসেবে তারা ঝুঁকছে চোরাকারবারিতে। সীমান্তে বসবাসরত স্থানীয়রা জানান, চোরাপথে মাদক আমদানি একটি মারাত্মক অপরাধ। এছাড়া দেশ-জাতির জন্য চরম ক্ষতিকর মাদক ও অবৈধ পণ্য আমদানি বন্ধসহ চোরাকারবারিদের দমনে আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দেন সংশ্লিষ্টরা।

কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) কুষ্টিয়া সদর সেক্টরের উপ-মহাপরিচালক কর্নেল মো. মারুফুল আবেদীন জানান, অতন্দ্রী প্রহরী হিসেবে বিজিবি সদস্যরা সব সময় রয়েছে সজাগ। চলতি বছরের গত ১০ মাসে মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র-গুলি, স্বর্ণসহ চোরাপথে আসা বিপুল পরিমাণ পণ্যের চালান আটক করা হয়েছে। চোরাচালান রোধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। আইনের চোখ এড়িয়ে কেউ ছাড় পাবে না বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *