বন্যায় সাড়ে ১৮ হাজার বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত লক্ষ্মীপুরে

বাংলাদেশ

লক্ষ্মীপুরে বন্যার পানিতে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার পাকা-আধাপাকা ও কাঁচা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ঘর মেরামত করতে প্রায় ১২৬ কোটি ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয় হতে পারে। মঙ্গলবার সকালে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৮ হাজার ৩৬৫ টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় সাড়ে ৭ হাজার বসতঘর, রায়পুরে ১ হাজার ৩০৮টি বসতঘর, রামগঞ্জে ১ হাজার ৮৮৫টি, রামগতিতে ১ হাজার ২৯২টি ও কমলনগরে ৬ হাজার ৩৮০টি বসতঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বসতঘরগুলো মেরামতের জন্য প্রায় ১২৬ কোটি ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয় হতে পারে। এরমধ্যে সদরের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো মেরামতে ৬২ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রায়পুরে ২ কোটি ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা, রামগঞ্জে ১৯ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রামগতিতে ৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ও কমলনগরে ৩৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

জানা গেছে, জেলার ৫ টি উপজেলার প্রায় ৫০ টি ইউনিয়িন ও ৪ টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা বন্যা কবলিত। এখনো সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের ১২ টি ইউনিয়নে বিস্তির্ণ এলাকা বানের পানিতে ভাসছে। খালবিলগুলো অবৈধভাবে দখল করে রাখার কারণেই পানি সহজেই নামছে না। এতে ২০-২৫ দিন ধরে বন্যার কবলে রয়েছে জেলার বিভিন্ন এলাকা। দীর্ঘ মেয়াদী এ বন্যা মানুষের জন্য বিপদজ্জনক হয়ে উঠেছে৷ পানিতে নিমজ্জিত থাকা কাঁচা-পাকা ও আধাপাকা বসতঘরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরের ভিটির মাটি ধুয়ে চলে গেছে। মাটির ঘরগুলোর ভিটা কাদায় পরিণত হয়েছে। কাঠ ও টিনের তৈরি বেড়াগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। কাঠে খুঁটিগুলো পঁচে গেছে। জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে অসংখ্য বসতঘর।

এদিকে বন্যার্ত এলাকার অধিকাংশ মানুষই কৃষিজীবী ও দিনমজুর। এ বন্যায় উপার্জন বন্ধ হয়ে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছেন দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা। ক্ষতিগ্রস্ত বসতঘরগুলো মেরামত নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন ভূক্তভোগীরা। ঘর মেরামতে সরকারিভাবে এখনো কোন সহায়তা দেওয়া হয়নি। সরকারের উপদেষ্টা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা লক্ষ্মীপুরে এসে পুনর্বাসনের ব্যবস্থার আশ্বাসসহ নতুন ঘর নির্মাণ করে দেবে জানিয়েছে। তবে সরকারি সহায়তা না পেলে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো মেরামত অসম্ভব হয়ে পড়বে। এজন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি সহায়তা দাবি করছে সংশ্লিষ্টরা।

লক্ষ্মীপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইউনুস মিয়া বলেন, বন্যায় অনেক বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা তালিকা করেছি। তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *