লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতি চরম আকার ধারণের আশঙ্কা

বাংলাদেশ

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে এগোচ্ছে। রোববার (২৫ আগস্ট) সকালে যে পরিমাণ পানির উচ্চতা ছিল, বিকেলে সে উচ্চতা আরও বাড়তে দেখা গেছে।

একদিকে ঢুকছে নোয়াখালী থেকে আসা পানি, অন্যদিকে বৃষ্টিপাতে কারণে বাড়ছে পানি।

ফলে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার শতভাগ এলাকা এখন পানির নিচে প্লাবিত হয়ে আছে। প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষ পানিবন্দি।

এদিকে পানিবন্দি লোকজন ছুটে চলছে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে। কোনো কোনো আশ্রয়কেন্দ্র পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। নতুন নতুন করে লোকজনের ঘরেও পানি ওঠতে শুরু হয়েছে। তারাও আশ্রয়কেন্দ্রে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রোববার (২৫ আগস্ট) পর্যন্ত ১২ হাজার ৭৫০ জন আশ্রয় নিয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে। তবে পানিবন্দি অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়িতেও আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে।

রোববার (২৫ আগস্ট) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জেলার সদর উপজেলার মান্দারী, লাহারকান্দি, বাঙ্গাখাঁ, পার্বতীনগর এবং পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বন্যার পরিস্থিতি অবনতি হতে দেখা গেছে।

শনিবার (২৪ আগস্ট) যে সব এলাকায় পানি ঢোকেনি, রোববার (২৫ আগস্ট) ওইসব এলাকায় পানি ঢুকতে দেখা গেছে। আর বিভিন্ন অঞ্চলে পানির উচ্চতা বাড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। পানির উচ্চতা না কমলে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, শনিবার রাত থেকে সকাল পর্যন্ত টানা ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। দুপুরের আগে কিছুটা কম বৃষ্টি হলেও বিকেলের দিকে আবারও ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এদিকে নোয়াখালী থেকে রহমত খালী খাল, ভূলুয়া খাল ও ওয়াপদা খাল হয়ে ব্যাপকভাবে পানি ঢুকতেও দেখা গেছে। এতে পনির উচ্চতা বাড়ছে।

লক্ষ্মীপুর পৌর সভায় ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাকছুদুর রহমান আলমগীর বলেন, চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। লোকজনের ঘরে পানি ঢুকে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় একটি বিদ্যালয় ভবনকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করে সেখানে লোকজনকে উঠানো হচ্ছে। কিন্তু দুর্গত এলাকায় ভুক্তভোগী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।

সদর উপজেলা দিঘলী ইউনিয়নে শনিবার রাতে ব্যাপকভাবে পানির চাপ শুরু হয়। রাতেই অনেক লোকজনকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয় সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও রেডক্রস সদস্যরা।

ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন চৌধুরী জাবেদ জানান, চলমান বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে। মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে আনা এবং তাদের আর্থিক সহায়তা এবং শুকনো খাবার বিতরণের জন্য সব স্বেচ্ছাসেবীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি নিজেও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে লোকজনকে সহায়তা করছেন। দিঘলী ইউনিয়ন পরিষদ ও তার ব্যক্তিগত কার্যালয়েও লোকজনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে উপযুক্ত করা হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইউনুস মিয়া বলেন, জেলার শতভাগ এলাকায় বন্যা কবলিত। পানি বাড়ছে। ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৪২০ জন লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ১২ হাজার ৭৫০ জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *