হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর এখন রিমান্ডে আছেন গণ-অভ্যুত্থানে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী দুই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, এক উপদেষ্টা এবং সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত এক কর্মকর্তা। তবে জিজ্ঞাসাবাদে তারা কেউ অভিযোগ স্বীকার করছেন না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক কোনো তথ্য দিতে পারছেন না। প্রশ্ন করলেই মাথা নিচু করে কাঁদছেন। এমনকি ছয় বছর ধরে চালানো নিজের মন্ত্রণালয়ের কোনো কাজের দায়দায়িত্বও নিতে অস্বীকার করে যাচ্ছেন। তিনি বলছেন, মন্ত্রণালয় চালালেও কোনো কিছুই তিনি একা করেননি।
এরপর তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী হয়ে আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান পলক। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা। তাই জয়ের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ পান পলক। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে হয়ে ওঠেন স্বেচ্ছাচারি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই পল্টন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান রিকশাচালক কামাল মিয়া। এ ঘটনায় পল্টন থানায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার হন সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক এবং ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান। নিরাপত্তার কারণে তাদের ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে রাখা হয়। থানা-পুলিশ হত্যা মামলার বিষয়ে খোঁজখবর নিলেও সার্বিক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডিবির গুলশান বিভাগ।
ডিবির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, হেফাজতে থাকা সবার জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অন্য আসামিদের মতোই তাদের একইভাবে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে জিজ্ঞাসাবাদের তুলনায় তাঁদের সবার স্বাস্থ্যের দিকেই বেশি নজর রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন : আগে থেকেই ডিবি হেফাজতে রিমান্ডে রয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আলোচিত সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (চাকরিচ্যুত) জিয়াউল আহসান। হকার শাহজাহান আলী হত্যা মামলায় ডিএমপির নিউমার্কেট থানায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে তাদের।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আনিসুল হক জিজ্ঞাসাবাদে কোনো প্রশ্নেরই জবাব দেননি। আর হাজার হাজার কোটি টাকা উপার্জন ও বিদেশে পাচারের বিষয়ে সালমান এফ রহমান বলেছেন, তিনি একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসার প্রয়োজনে দেশে ও দেশের বাইরে টাকাপয়সা লেনদেন করতে হয়েছে তার।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মাইনুল হাসান বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে এ বিষয়ে কিছুই বলার সময় হয়নি।