এমপক্স ভাইরাস, বেনাপোল ইমিগ্রেশনে সতর্কতা জারি

বাংলাদেশ

এমপক্স সংক্রমণ রোধে সতর্কতামূলক কার্যক্রম শুরু হয়েছে বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগে। ভারত থেকে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর দেওয়া হচ্ছে দেশে ঢোকার অনুমতি। সংক্রমণের মাধ্যম ও প্রতিরোধমূলক নির্দেশনার বিভিন্ন লিফলেট সাঁটানো হয়েছে যাত্রী প্রবেশ দ্বারে।

জানা যায়, করোনার প্রাদুর্ভাব কাটতে না কাটতে এবার নতুন ভাইরাস এমপক্স ভাবিয়ে তুলেছে বিশ্বকে। আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোয় প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এমপক্স এই মহাদেশের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি দেশেও ছড়িয়ে পড়ছে। এরমধ্যে রয়েছে বুরুন্ডি, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, সুইডেন, কেনিয়া ও পাকিস্তান। এমপক্স ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

সংক্রমিত ব্যক্তির সরাসরি যে কোনো ধরনের সংস্পর্শ বা যৌনমিলনের মাধ্যমে, ব্যবহার করা কাপড়, সুঁই বা অন্যান্য জিনিসপত্রের মাধ্যমে, আক্রান্ত প্রাণি শিকার করা, কাটা বা রান্না করার সময়, কম তাপমাত্রায় আক্রান্ত প্রাণির রান্না করা মাংস খেলে এমনকি আক্রান্ত গর্ভবতী মায়েদের থেকে তাদের অনাগত শিশুর কাছেও ভাইরাসটি যেতে পারে। এই রোগে আক্রান্তদের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, ফোলা, পিঠে এবং পেশিতে ব্যথা। আক্রান্ত ব্যক্তির একবার জ্বর উঠলে গায়ে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।

সাধারণত মুখ থেকে শুরু হয়ে পরে হাতের তালু এবং পায়ের তলদেশসহ শরীরের অন্যান্য অংশে তা ছড়িয়ে পড়ে। ২০২২ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাঙ্কিপক্সের নাম বদলে রাখে ‘এমপক্স’। গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে ২০২৩ সালের জানুয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ২৭ হাজার মানুষের এমপক্স শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ১ হাজার ১০০ জনের বেশি। আক্রান্ত ও মারা যাওয়া ব্যক্তিদের বড় অংশই শিশু।

প্রাথমিকভাবে এই রোগের প্রকোপ বানরের মধ্যে দেখা গেলেও এই রোগে মানুষও এখন সংক্রমিত হওয়ায় নাম পরিবর্তন হয়ে এমপক্স রাখা হয়। এদিকে এমপক্স সংক্রমণ রোধে বেনাপোল বন্দরের ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগে নেওয়া হয়েছে সতর্কতা। এ বন্দর ব্যবহার করে সবচেয়ে বেশি দেশ, বিদেশি পাসপোর্টধারী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করে থাকে। ভারত থেকে আসা এসব যাত্রীদের শরীরে কোনো উপসর্গ আছে কি না ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। তবে এখন পর্যন্ত কেউ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা।

পাসপোর্টধারী মিথিলা জানান, ভারত থেকে ফেরার সময় সংক্রমণ রোধে ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগ শারীরিক পরীক্ষা করছে। তবে সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পরমর্শ জানান তিনি।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার মরিয়ম খন্দকার জানান, এমপক্স ভাইরাসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ায় সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশে চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ শুরু করেছে। সন্দেহভাজন যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ ছাড়া সংক্রমণ রোধে যাত্রীদের বিভিন্ন পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। ভবিষ্যতে সংক্রমিত কাউকে পাওয়া গেলে তাকে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে স্বাস্থ্য বিভাগ। সবার সহযোগিতা পেলে আগে যেভাবে করোনা ভাইরাস ব্যাপক হারে সংক্রমণ প্রতিরোধ সম্ভব হয়েছে এ ভাইরাসটিও প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *