হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ইরান। তবে তাদের বর্তমান অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থার মতে, প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলে অভিযান পরিচালনা করতে কালক্ষেপণ করছে ইরান। আল আরাবিয়ার বরাত দিয়ে ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানায়, এ সপ্তাহেই ইসরায়েলে আক্রমণের কথা থাকলেও সেটি স্থগিত করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার জেদ্দায় ওআইসি’র সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ধারণা করা হচ্ছে, বৈঠকটির কারণেই ইরান তাদের সামরিক অভিযান স্থগিত করেছে।
বৈঠকে ইরানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বাঘেরি-কানির একটি প্রতিনিধি দল ওআইসি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য জেদ্দায় গিয়েছিলেন। সেখানে ওআইসি’র অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে সেই ব্যাপারে আলোচনা হয়।
কানি বৈঠকে ইরানের উপর ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মুসলিম দেশগুলোর সহযোগিতা কামনা করেন। ইরানের আত্মরক্ষার পূর্ণ অধিকার আছে, এমন মন্তব্য করে কানি বলেন, হানিয়া হত্যা ইরানের সার্বভৌমত্বের উপর একটি বড় আঘাত।
ইরান ইতোমধ্যেই হানিয়া হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। তবে, ইসরায়েলের উপর হামলায় কালক্ষেপণ করার কারণে ইরানের অবস্থানের ব্যাপারে প্রশ্ন উঠছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের বরাত দিয়ে ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তেহরানে হামাস নেতাকে হত্যার পরও ইরানের সময়ক্ষেপণ প্রমাণ করে বাইডেন সফল হচ্ছেন।
ওয়াশিংটন পোস্টে আরও বলা হয়, হামাস নেতা হানিয়ার মৃত্যু ঠিক কীভাবে হয়েছিল তা নিয়ে ইরানের বিবৃতি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। শুরুতে তেহরান দাবি করে, ইসরায়েলি মিসাইলের আঘাতে হানিয়ার মৃত্যু হয়। তবে গোপন সূত্রে ইরানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, লুকিয়ে রাখা একটি বোমার আঘাতে হানিয়ার মৃত্যু ঘটে।
ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মহড়ার কারণে ইরান তাদের অভিযান পরিচালনা করা থেকে পিছপা হয়েছে। জানা গেছে, তেহরান ও জাতিসংঘের ইরানি মিশনের সঙ্গে হোয়াইট হাউজের একটি গোপন যোগাযোগের ঘটনাও ঘটেছে। সুইস দূতাবাসের মধ্যস্থতায় এ যোগাযোগ করা হয় বলে দাবি করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট।
ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট ডেভিড ইগনেশিয়াস দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলেন, ইরান পরিস্কারভাবেই বুঝতে পারছে যুক্তরাষ্ট্র নিজ স্বার্থ রক্ষায় খুবই তৎপর। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক শক্তি মধ্যপ্রাচ্যে প্রদর্শন করছে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের সহযোগী দেশের স্বার্থ রক্ষায় সচেষ্ট।