দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ডাকাতির খবর পাওয়া গেছে। ডাকাতি ঠেকাতে তাই সবাই দল বেঁধে রাতের বেলায় এলাকা পাহারা দিচ্ছেন। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে করা হয়েছে মাইকিংও।
বুধবার ৭ আগস্ট দিনগত রাতে রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, পল্লবী, বসিলা, উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে ডাকাতির খবর পাওয়া গেছে। অনেকে ফেসবুকে পোস্ট করে সবার কাছে খবর পৌঁছে দিচ্ছে।
মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিং, মোহাম্মদিয়া হাউজিং, চান মিয়া হাউজিং, চাঁদ উদ্যান, ঢাকা উদ্যান, চন্দ্রিমা হাউজিং এলাকায় ডাকাতির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
নবোদয় হাউজিং থেকে ২ লাখ টাকা ডাকাতি হওয়ার অভিযোগ করেছেন সেখানকার একটি বাড়ির মালিক। পরে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে স্থানীয়রা ১১ জনকে আটক করে তাদের হাতে তুলে দেন।
এলাকাবাসী জানান, দেশীয় অস্ত্র হাতে কিছু তরুণ-কিশোরের ছোট ছোট দল রাস্তায় ঘোরাফেরা করছিল। তারা বিভিন্ন বাড়ির দরজা ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলতে বলছিল। ডাকাত আতঙ্কের মধ্যে সেনাবাহিনীর একাধিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে মানুষ কিছুটা স্বস্তি বোধ করে।
এছাড়াও ডাকাতের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ধানমণ্ডি, শংকর ও মিরপুর এলাকতেও। মিরপুর ১৪ নম্বরের সরকারি কর্মকর্তাদের একটি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা চিকিৎসক আবির হোসেন জানান, তাদের হাউজিং কমপ্লেক্সের ভেতরে ডাকাতরা ঢুকে পড়েছিল বলে খবর ছড়িয়ে পড়লে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
এদিকে গত রাত ৩টার দিকে নিজের ফেইসবুক অ্যাকাইন্ট থেকে লাইভে এসে সাহায্য চান অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক। উত্তরার প্রিয়াংকা রানওয়ে সিটিতে ‘ডাকাতের হামলার’ খবর দিয়ে তিনি সাহায্য চাইছিলেন।
চমক বলেন, ভবনের বাসিন্দারা যার হাতে যা আছে দা-বটি-লাঠি তাই নিয়ে নিচে নেমেছেন ডাকাত মোকাবেলা করতে। তারা সেনাবাহিনীকে ফোন করেও পাচ্ছেন না।
তিনি সেনাবাহিনীর টহল দলকে সেখানে যাওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করেন। মিরপুর সেনানিবাস সংলগ্ন ইসিবি চত্বরে ডাকাতরা একটি ভবনে হামলা করেছে বলে অনেকে ফেইসবুকে লাইভ ভিডিও করতে থাকেন। ভিডিওগুলোতে শুধু হইচই আর সেনা টহলগাড়ির সাইরেনের শব্দ শোনা যাচ্ছিল।
পুলিশের অনুপস্থিতির সুযোগে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্কও বিরাজ করছে। দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন রাজধানীবাসী।
এদিকে আইএসপিআর থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে জনসাধারণের জান-মাল ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া যেকোন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড, হানাহানি এবং প্রাণনাশের হুমকির সম্মুখীন হলে নিকটস্থ সেনাবাহিনী ক্যাম্পে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।