বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগ করলেন কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আমেনা বেগম। আজ রোববার (১১ আগস্ট) সকাল থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগানে অধ্যক্ষকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করেন।
এ সময় কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আমেনা বেগম শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সাদা কাগজে ‘আমি পদত্যাগ করলাম’ লিখে অধ্যক্ষের স্বাক্ষর ও সিলমোহর দিয়ে পদত্যাগ করেন।
অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কবি নজরুল সরকারি কলেজের সমন্বয়ক মেহেদী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমাদের কলেজের চারজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন এবং শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে তিনি আহত ও নিহত শিক্ষার্থীদের কোনো খোঁজখবর নেননি। এ ছাড়া দুর্নীতিগ্রস্ত ও স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের নেত্রী স্থানীয় পর্যায়ে ছিলেন। কলেজের নানা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত। আমাদের দাবির মুখে দুর্নীতিগ্রস্ত অধ্যক্ষ আমেনা বেগম পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এ বিষয়ে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জাকারিয়া বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আমাদের কলেজের চার শিক্ষার্থী এবং অনেকে গুরুতর আহত হয়েছে। আমরা বারবার শিক্ষার্থীদের পক্ষে অধ্যক্ষকে সহযোগিতা জানালেও তিনি সহযোগিতা করেননি। বরং তিনিও সাবেক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো আচরণ করেছেন। শেষ মুহূর্তে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করার সময় তিনি চরম দাম্ভিকতার পরিচয় দেন।
জানা যায়, অধ্যাপক আমেনা বেগম আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক উপকমিটির (২০২২-২০২৫) সদস্য ছিলেন। অন্যদিকে অধ্যক্ষের পদত্যাগের পর ভেঙে দেওয়া হয়েছে কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদ। আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা পরিষদের সদস্য হওয়ার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক পরিষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি তুলে আন্দোলন শুরু করেন। পরে দুপুর ১টার পর কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ছালেহ আহমেদ ফকির শিক্ষক পরিষদ ভেঙে দিতে বাধ্য হন।
এরইমধ্যে তিনি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এতে বলা হয়েছে, বিভাগীয় প্রধান ও সহকর্মীদের জানানো যাচ্ছে, ১৭তম শিক্ষক পরিষদ রোববার (১১ আগস্ট) থেকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।